ছুটি
- সঞ্জয় আচার্য ১৭-০৫-২০২৪

এইতো সেদিন বিকেল বেলা বৈশাখী মেঘ সন্তরণে মন ভেজায়নি তখনো পঞ্চখণ্ডের পিচঢালা পথেত্রিচক্রযান চেপে ঘুরতে গেলাম বিপ্রবর্গের আদি নিকেতনেচারিদিকে অদ্ভুত নিস্তব্ধতা- বাতাসে তুলসীর আঘ্রাণ মনের অবরুদ্ধ দুয়ার দিল খোলেচারপাশ ছেয়ে আছে জুঁই-মালতী-চম্পক-বকুল-কুন্দ-কুরুবকে, পাশেই নাটমন্দির-আদিম সৌষ্ঠব সেখানে দাঁড়িয়ে পরাশর-ভরদ্বাজ-কাশ্যপগোত্রীয় মহাত্মারা, বড়লিখার পুরকায়স্থজন স্বেদ-কম্প-অশ্রু-জল-রোমাঞ্চ-পুলক হয় মধুর শ্রবণে, অনি পণ্ডিত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেনগৌরগণোদ্দেশদীপিকা, চৈতন্যচন্দ্রোদয়াবলী, রাধারসসুধানিধি, শ্রীকৃষ্ণ কর্ণামৃত, মাধুর্য্য কাদম্বিনীশব্দকল্পদ্রুমে চিরবিরহিণীর অশ্রুত ব্যাকুলতা- গৌরপ্রেম রসার্ণবে অভিষিক্ত হব বলেপঞ্চখণ্ডের অখ্যাত কিঙ্কর আমি- ডুব দেই প্রেমানন্দে।
---
বৈশাখী মেঘ মন ভেজাল, এখন দারুণ অগ্নিবাণ, এখন চোখ খুললেই দেখিসামনে সুরম্য ভবন- পঞ্চখণ্ড গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরি শ্যাওলা ধরেনি ইটের পাঁজরে। আর ক’দিন পরেই পরবে নতুন বেশস্বচ্ছ কাঁচ ঘেরা উন্মুক্ত জানালা, ঝাড়বাতি, ফ্যান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ-তৃতীয় প্রজন্ম ঘিরে ব্রাউজিং, রঙিন পর্দা টেনেগত জীবনের যবনিকাপাত- চারদিকে বিস্তর হট্টগোল, তর্কবাগীশ-পণ্ডিতপ্রবর, অখণ্ডপ্রতাপ যেনআদা-নুন খেয়ে একে অন্যে শুধু কাঁদা ছোঁড়াছোঁড়ি টোল নেই, ছাত্র নেই, অনি পণ্ডিতেরা সব গেল কই? কোথায় গেলে হে অভিরাম-মুকুন্দ? তোমাদের ছুটি হল কবে? তোমরা কি মরে গেলে সব? কই আমাদের তো চৈতন্য হল না! জবাব দেবার কেউ নেই, শুধু-গত ঐতিহ্যের জানান দিতে দেয়াল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে নবীন অশ্বত্থ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।